বিড়াল-কুকুরের ও কি পিরিয়ড হয়?
আমদের জীবনচক্রে বংশবৃদ্ধির প্রয়োজনে নারীদের জীবনের বিশেষ সময়ে ঋতুচক্রের মধ্য দিয়ে যেতে হয়। এখন কথা হচ্ছে বংশবৃদ্ধির প্রয়োজনীতা তো শুধু মাত্র মানুষের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। জীবকুলের সকল প্রাণীই তো তার বংশ টিকিয়ে রাখতে চায়, তাহলে কি অন্য প্রাণীদেরও এমন ঋতুচক্রের মধ্য দিয়ে যেতে হয়? প্রথমত, ঋতুচক্র হলো জরায়ুর আস্তরণের (এন্ডোমেট্রিয়াম) ক্ষরণ। এটি নির্দিষ্ট স্তন্যপায়ী প্রজাতির যৌন প্রজনন বয়সী স্ত্রীদের (any female mammals) মধ্যে নিয়মিতভাবে ঘটে থাকে। যদিও অনেকে এই সংজ্ঞায় দ্বিমতও পোষন করে থাকে, তবে এই প্রক্রিয়া সাধারণত প্রাইমেটদের (মানুষ, বানর, হনুমান, গরিলা ও লেমুরজাতীয় স্তন্যপায়ীদের নিয়ে গঠিত উন্নত হাত, পা ও বড় মস্তিষ্কবিশিষ্ট একটি বর্গ) মধ্যে সীমাবদ্ধ বলে মনে করা হত। কিন্তু বর্তমানে প্রাইমেট ছাড়াও হাতী, লাল ক্যাঙ্গারু, সিংহ, বিড়াল, কুকুর, বিশেষ প্রজাতির বাদুড়, ইঁদুরের শরীরের এমন শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়ার প্রমাণ পাওয়া গেছে।[১]
সাধারণ ভাবে আমরা, ঋতুচক্র বলতে বিশেষ প্রক্রিয়ায় রক্তক্ষরণকেই বুঝে থাকি, কিন্তু বিভিন্ন প্রজাতির দেহে বিভিন্ন ভাবে এই চক্র প্রকাশ পায়। যেমনঃ বিড়াল। বিড়াল হল পলিস্ট্রাস প্রজননকারী, যার মানে এরা এদের ঋতুচক্রের সময় হরমোনাল কিক অনুভব করে যা বছরে ৩-৫ বারের মতো হয়ে থাকে। এইসময় তাদের দেহে যে রকম পরিবর্তন আসে তা মানুষের সাথে তুলনা করলে অনেকটা একই ধাচের দেখায়। তবে বাহ্যিকভাবে রক্তপাত তেমন দেখা যায় না। ক্ষেত্র বিশেষে হালকা রক্ত ক্ষরণ হতে পারে যা খুবই সামান্য! অনেক সময় এই অল্প রক্ত ক্ষরণ বোঝাও যায় না।[২]
অপর দিকে হাতির সাথে মানুষের প্রক্রিয়ার বেশ মিল রয়েছে, একটি ঋতুমতী হাতি তার স্যানিটারি তোয়ালে হিসাবে ঘাস ব্যবহার করে এবং সেই সময়কালে সাধারণত নির্দিষ্ট এক জায়গায় অবস্থান করে (সোর্সঃ মরচিসন ফলস ন্যাশনাল পার্কের হোস্টগন)
অপরদিকে, একটি স্ত্রী বাঘ প্রতি তিন থেকে নয় সপ্তাহে এস্ট্রাসে প্রবেশ করতে পারে (যে সময় একটি মহিলা গ্রহনশীল এবং তরুণ গর্ভধারণ করতে সক্ষম) এবং তার গ্রহন ক্ষমতা তিন থেকে ছয় দিন স্থায়ী হয়।[৩]
আর বাদুড়ের ক্ষেত্রে, বাদুড় ৩৩ দিন নিজ আবাসস্থলে অবস্থা করে তার শরীরের এই পরিবর্তন নিয়ে বিশ্রাম নেয়। তাদের ক্ষেত্রে রক্তপাত শুধু ১ দিনই হয়, অন্যান্য দিন শুধু শারীরবৃত্তীয় পরিবর্তন হয়। ১৮ তম দিনে ডিম্বাশয়ে একটি প্রিওভুলেটরি ফলিকল পাওয়া যায় যখন এলএইচ এবং এফএসএইচ এর মাত্রা তাদের ম্যাক্সিমায় পৌছায়, একটি ঘন এন্ডোমেট্রিয়ামের সাথে।[৪]
এভাবে জীবকুলে গর্ভধারনে সক্ষম সকল প্রাণীরই শারীরবৃত্তীয় কিছু পরিবর্তন ঘটে থাকে। তবে এরমানে এটা নয় যে তা মানুষ বা অন্যান্য প্রাইমেদের মতো হুবুহু একই প্রক্রিয়াতেই হবে।
No comments